‘কোরবানি, কোরবানি, কোরবানি.., আল্লাহু পেয়ারি হে কোরবানি...’ মঙ্গলবার দুপুরের রাজধানীর লালবাগ কেল্লার মোড় বেড়িবাঁধ গরু-ছাগলের হাটে মাইকে উচ্চস্বরে বাজছিল এ হিন্দি গানটি। দু-এক কলি গান বাজার পর আবার ভারি গলায় ভেসে আসে ‘হাট, হাট, হাট.. গরু ছাগলের বিরাট হাট, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কেল্লার মোড় বেড়িবাঁধের হাট।’
ইজারাদারদের পক্ষের লোকজন হাটের গুণগান গাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিত কোনো পশু যেন ইজারা হাসিল ছাড়া বেরিয়ে যেতে না পারে সেদিকে বার বার সতর্ক করা হচ্ছিল। কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে হাটে এসব আহ্বান সেই ক্রেতাদেরই দেখা নেই। ফলে বিক্রেতা ও ইজারাদারদের মুখে কিছুটা হতাশার ছাপ।
আবদুল হামিদ নামে এক ইজারা আদায়কারী জানান, সোমবার (২৮ আগস্ট) থেকে বসে আছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটি গরুর ইজারাও আদায় হয়নি। গতবারের চেয়ে এবার গরুর আমদানিও তুলনামূলকভাবে কম।
তিনি আরও বলেন, আরিচা রাস্তায় (ঢাকা-আরিচা সড়ক) গরুর গাড়ি আটকে আছে। এখনও হাটে ক্রেতা না এলেও বুধবার (৩০ আগস্ট) থেকে হাট জমে উঠবে এবং ব্যবসা ভালো হবে বলে আশা করছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, লালবাগ কেল্লার মোড় শ্মশানঘাটের আগে রাস্তার দুই পাশজুড়ে ছোট-বড় গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। ফলে রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিনিট কয়েকের বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধে কাদা পানিতে সয়লাব। অন্যদিকে হাটে অসংখ্য গরু দেখা গেলেও ছাগলসহ অন্য কোনো গবাদিপশু চোখে পড়েনি।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে ৯টি গরু নিয়ে এ হাটে এসেছেন জমির আলী। রাস্তাঘাটে যানজটের ভয়ে দুদিন আগেই চলে এসেছেন। তিনি জানান, কুষ্টিয়া থেকে ট্রাকে ২৭ হাজার টাকা ভাড়ায় ঢাকায় এসব গরু নিয়ে এসেছেন। রাস্তাঘাটের যত খরচ তা ট্রাকমালিক বহন করেছেন। তবে এবার পথে পুলিশ বা অন্য কোনো ধরনের চাঁদাবাজির দৃশ্য চোখে পড়েনি।
এদিকে যানজটের ভয়ে দুদিন আগে আসলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো গরু বিক্রি করতে পারেননি জমির আলী। তিনি বলেন, ক্রেতা আসলেও দাম করেননি। লোকজন এখনও ঘুরে ঘুরে দেখছেন, কেনাকাটা শুরু করেননি।