অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গুলশানের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া আইন অনুযায়ী বিকল্প হিসেবে একটি জাতীয় দৈনিকে এই নোটিশ জারি করতে বলেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো: খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো: খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রিন্ট, ইলেকট্রিক ও অনলাইনসহ গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য প্রচার বন্ধ করা প্রশ্নে জারি করা রুলের নোটিশ রিটে উল্লেখিত তারেক রহমানের ঠিকানা ভুল থাকায় তা সংশোধন করে আবেদন করার পর এ আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, মূলত রিটে তারেক রহমানের যে ঠিকানা দেয়া হয়েছিল তা ভুল ছিল। আমরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ আদালত সংশোধিত যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে সেই ঠিকানায় সুপ্রিম কোর্টের যিনি সার্ভেয়ার আছেন তিনি প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী নতুন করে উনাকে নোটিশ দেবেন।
আদালত এটাও বলেছেন, তারেক রহমানের যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে সেই ঠিকানায় যদি না পাওয়া যায় তা হলে সেই বাসার দরজায় বা বাসার সামনে নোটিশটি টাঙ্গিয়ে দেয়ার জন্য। এছাড়া একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নোটিশ প্রকাশ করতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এই রিট আবেদন চলে না, এ কারণে যে সংবিধান অনুযায়ী রিট আবেদন করতে হয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। ব্যক্তির বিরুদ্ধে রিট আবেদন হয় না।
তিনি বলেন, পাক-ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে তারেক রহমান একমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যার বক্তব্য প্রচারে বাধা দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ তাদের এবং আইনজীবী নেতৃবৃন্দ ও একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের মাধ্যমে আদালতের আশ্রয় নিতে হয়েছে। এভাবে আদালতে আশ্রয় নেয়ার মাধ্যমে তাদের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করেছে।
এর আগে আদালতে এ বিষয়ে শুনানি করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদল, সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল। অপর দিকে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আওয়ামী পন্থী আইনজীবী ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে গত ৮ আগস্ট এ মামলার শুনানি নিয়ে আদালতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। ওইদিন উভয়পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বলেন, রুলস অনুযায়ী অবশ্যই নোটিশ দিতে হবে তারেক রহমানকে। তবে সেটা কোন প্রক্রিয়ায় তার উপায় খুঁজতে হবে। বিকল্প পদ্ধতি বের করতে হবে। এরপর এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার নিয়ে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ অর্ন্তর্বতীকালীন এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদিদের নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানসহ বিবাদিদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।