সীতাকুণ্ড ( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর অভিযানে, সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে, এরি ধারাবাহিকতায় আজ (২৩ আগস্ট) বুধবার সীতাকুণ্ড গভীর পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তিনটি দেশী তৈরী অস্ত্র সহ বিপুল পরিমান অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। র্যাব-৭ চট্টগ্রাম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ছিন্নমূল পাথরিঘোনা দূর্গম পাহাড়ি এলাকার জনৈক জাহাঙ্গীর আলম এর বাগান বাড়িতে কতিপয় ব্যক্তি অবৈধভাবে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরী করে ক্রয় বিক্রয় করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ আগষ্ট সন্ধ্যায় র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর একটি অভিযানিক দল বর্ণিত বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৩৯) পিতা- মৃত নুরুল আলম ও মোঃ ইমন (২৪) পিতা- মোঃ ইউসুফ, উভয়ের সাং- ছিন্নমূল, থানা- সীতাকুন্ড, জেলা- চট্টগ্রাম কে আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে বাগান বাড়ীর টিনের দোচালা ঘরের ভিতর থেকে প্লাষ্টিকের বস্তা হতে সদ্য প্রস্তুতকৃত ৩টি লোকাল ঘান, ১টি রামদা এবং অস্ত্র তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করে।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর মিডিয়া পরিচালক, সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার জানায়, আমাদের নিকট তথ্য ছিল কতিপয় ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুন্ডের পাহাড়ী এলাকায় অস্ত্রের কারখানা স্থাপন করে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র তৈরি পূর্বক স্থানীয় জলদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী এবং ডাকাত দলের সদস্যদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের ১টি অভিযানিক দল দীর্ঘদিন যাবত গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে থাকে। যেহেতু এলাকাটি দূর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং অপরিচিত কাউকে দেখলেই অস্ত্র তৈরির সাথে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যগণ সতর্ক হয়ে যেত যার ফলে তাদের অবস্থান সনাক্তকরণ ছিল একটি কঠিন বিষয়। তথাপিও র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর চৌকষ অভিযানিক দলের গোয়েন্দা তৎপরতায় ও পাহাড়ি এলাকার ভিতর দিয়ে বিশেষ কৌশলে এলাকায় প্রবেশ করায় উক্ত চক্রের সদস্যরা টের পায়নি। অতঃপর কারখানার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বাগান বাড়ীর টিনের দোচালা ঘরে অভিযান পরিচালনা করে সদ্য প্রস্তুতকৃত ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ প্রধান কারিগর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগী মোঃ ইমন’কে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পরষ্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র স্থানীয় জলদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী এবং ডাকাত দলের সদস্যদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। স্থানীয় সূত্রমতে ও গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আটককৃত আসামীরা ৭-৮ বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলের দৃষ্টি এড়াতে মাঝে মাঝে লোক দেখানো কৃষি কাজ করে থাকে।
উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে ধৃত আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, বিশেষ ক্ষমতা, ডাকাতির প্রস্তুতি, মাদকদ্রব্য আইন সংক্রান্তে ৮টি মামলা রয়েছে। তাদেরকে সীতাকুণ্ড থানা হস্তান্তর করা হয়েছে।