ফ্রান্সে মুসলিম মেয়েদের ক্লাসে আবায়া পরিধান নিষিদ্ধ করার পরও শিক্ষাকেই অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ এই পোশাকটি না পরেই স্কুলে যাচ্ছে তারা।
গ্রীষ্মের ছুটি শেষের একদিন আগে ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আত্তাল স্কুলে মেয়েদের আবায়া পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।গ্যাব্রিয়েলের যুক্তি হচ্ছে আবায়া ধর্মনিরপেক্ষতার বিপক্ষে যায়!
১৫ বছরের স্কুল পড়ুয়া ফাতিমা বলেন, কেউ কেউ মাথায় স্কার্ফ পরেন, কেউ কেউ আবায়া, প্যান্ট বা ঐতিহ্যবাহী সাব-সাহারান আফ্রিকান পোশাক পরেন।
পোশাকের আকৃতি, দৈর্ঘ্য বা রঙ কি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ? আসলে আবায়া ইস্যুটি ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমানদের লক্ষ্য করে স্পটলাইটে আনা হয়েছে। আবায়া বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে ফ্রান্সে বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটকে আড়াল করতে।
ফাতিমার সহপাঠী রোকায়া বলেন, আমি ক্লাসের ঘন্টা মিস করতে চাই না বা আবায়ার কারণে বহিষ্কার হতে চাই না, বিশেষ করে আমার শিক্ষার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। এটা অন্যায্য, কিন্তু প্রয়োজনে আবায়া না পরেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বাসমা ও হাসিনা বলেন, যেন আবায়া নিষিদ্ধ করলে সবকিছু সমাধান হয়ে যাবে। আমরা বুঝি না পোশাক কিভাবে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তুলছেন। কিন্তু এর মানে হলো নির্দিষ্টভাবে ব্যক্তিকে তাদের ইচ্ছেমতো পোশাক পরতে দেওয়া। এটি প্রত্যেকের স্বাধীনতাকে সম্মান করে। তারা আরো বলেন, আবায়া আমাদের ওজন লুকিয়ে রাখতে এবং আত্ম-সচেতনতা ছাড়াই চলাফেরা করতে দেয়।
এর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। সামাজিক কেন্দ্রের অন্যতম এক সহায়তাকারী নাজিহা বলেন, ফ্রান্সের তরুণরা অন্যায়, বর্ণবাদ এবং বেকারত্বের সমস্যার কারণে বিদ্রোহ করেছে। এখানে মাদক ব্যবসা ছাড়া আর কিছুই নেই, যা প্রতিদিন অপরাধীদের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। তারপরও আমি চাই না যে, এই পোশাকের সমস্যাটি আমাদের শিক্ষার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলুক।
ফ্রান্সে ৩৪ বছর আগে, ১৯৮৯ সালে লেইলা, ফাতিমা এবং সামিরা নামে তিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ক্লাসে মাথার স্কার্ফ খুলতে অস্বীকার করায় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল।