সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৮নং সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত। মিরপুরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে জামায়াতের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। দাকোপের খুটাখালী বাজুয়া আর্য্যহরি সভার নবনির্বাচিত কমিটি গঠিত।  মৌলভীবাজারে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন- সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন । সীতাকুণ্ড শিবপুর হোসাইন- জোহরা হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার সদ্য ৬ হাফেজ কে পাগড়ী ও সার্টিফিকেট প্রদান চাঁদপুর সিটি কলেজের প্রভাষক মো: শামসুল আলমের বসত বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় শাহরাস্তি থানায় মামলা। মহসীন ফাতেমা সিদ্দিকী ফাউন্ডেশনের নতুন কমিটি ঘোষনা সভাপতি কায়সার,সম্পাদক তাইসির। চিলড্রেন পার্ক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। সীতাকুণ্ডের ছেলে আবুধাবী প্রবাসী আবারো ৫ম বার সিআইপি নির্বাচিত হলেন।  সীতাকুণ্ডের বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও আলেমেদ্বীন মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী’র একান্ত সাক্ষাৎকার।
বিজ্ঞপ্তিঃ

"দৈনিক দেশি নিউজ 24" এর জন্য সারাদেশে  প্রত্যেক  বিভাগ,জেলা ও উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগঃ ই-মেইল-Newsdeshy@gmail.com/Mmdidar7@gmail.com মোবাইলঃ 01714430261/01720834962 WhatsApp & Imo:00966509665820 #বিশ্বব্যাপী আপনার প্রতিষ্টান ও পন্যের প্রচার প্রসারে বিজ্ঞাপন দিতে ও বিস্তারিত যোগাযোগের জন্য আমাদেরকে উল্লেখিত ইমেইলে ইমেইল করুন। Newsdeshy@gmail.com -  Mmdidar7@gmail.com

রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই দু’শতাধিক ছোটবড় দোকান

  • আপডেট সময়ঃ শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৭৫৬ ভিউ

দৈনিক দেশি নিউজ২৪ অনলাইনঃ

রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই দু’শতাধিক ছোটবড় দোকান।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) ইংরেজি দিবাগত রাত তিনটার পর এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানাযায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ শুরু করলে,তাদের সাথে যোগ দেয় সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী-বিজিবিসহ পুলিশের সদস্যরা। ছয় ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার(১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩) ইংরেজি সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে অগ্নিকান্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি কেউই।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার রাত ৩টা ৪৩ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও দুটি ইউনিট। নিয়ন্ত্রণকক্ষ আরও জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের আরও চারটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি বলে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা রাশিদ বিন খালেদ জানিয়েছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ সাহায্যকারী দল।

এদিকে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকায় ও মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এই মার্কেটটি অনেকটা বঙ্গবাজার মার্কেটের মতো। দোকানের সামনেও দোকান ছিল।

আগুনে মার্কেটের প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেট ও কাঁচা বাজারে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৭০০-৮০০টি দোকান ছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রথমে হক বেকারি থেকে আগুনের সূত্রপাত পরে বাতাসে মুহূর্তেই সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মার্কেট বন্ধ থাকায় ফায়ার সার্ভিস প্রথমে এসে ভেতরে ঢুকতে পারেনি। এজন্য আগুন আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

কৃষি মার্কেটে কাপড়ের দোকানি মাহবুব হাসান বলেন, তার দোকানে লাখ পাঁচেক টাকার মালামাল ছিল। প্রথমে হক বেকারিতে আগুন লাগে। পরে সেই আগুন ছড়িয়ে যায়। মার্কেটে ৫০০ এর বেশি দোকান পুড়েছে।

আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে যা বলছেন নিরাপত্তারক্ষীরা : বেকারি পণ্যের দোকান হক স্টোর। কৃষি মার্কেটের প্রধান সড়কের পাশেই দোকানটি। রাত তখন আনুমানিক সাড়ে ৩টা। ওই দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন রাতের নিরাপত্তা প্রহরীরা। দ্রুত তারা বিদ্যুতের প্রধান লাইনটি বন্ধ করে দেন। এরপর নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন। সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেন। অন্তত ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম গাড়ি আসে ঘটনাস্থলে। এমনটাই বলছিলেন নাইটগার্ড হিসেবে দায়িত্বরত মো. দিলশাদ।

মোহাম্মদপুরের প্রধান এই কাঁচা বাজারটিতে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬০০টি। যার মধ্যে কাপড়ের দোকান, মুদি পণ্যের দোকান, জুতা, জুয়েলারি, বেকারি, প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে। এর বাইরে সবজি বাজার, মাছ ও মাংসের বাজার রয়েছে। সবজি, মাছ ও মাংসের বাজার আগুন থেকে রক্ষা পেলেও বন্ধ রয়েছে।

নিরাপত্তা প্রহরী মো. দিলশাদ জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছার আগেই ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। হক স্টোরটিও বন্ধ ছিল। বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে তার ধারণা।

প্লাস্টিক ও মুদি দোকানগুলোতে তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এতে কোটি কোটি টাকার পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

এদিকে হাজার হাজার উৎসুক জনতাকে ফায়ার সার্ভিস, সেনা ও বিজিবি সদস্যরা সরিয়ে দিতে হিমশিম খেতে হয়। আগুন নেভানোর কাজে পোহাতে হয় ভোগান্তি।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করেছে পুলিশ।

২১৭ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত: ডিএনসিসি

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে র ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মার্কেটটি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা। সেলিম রেজা বলেন, ‘মার্কেটে আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ মার্কেট-সংলগ্ন ফুটপাতে অনেক অবৈধ দোকান ছিল বলে উল্লেখ করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

সেলিম রেজা বলেন, ‘আমরা মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করছি। সিটি করপোরেশন তাদের (ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী) পাশে দাঁড়াবে। যতটুকু সম্ভব ডিএনসিসির পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।’

পরে ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তার চেষ্টা করা হবে।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মার্কেটে অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়েরও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফুটপাত-সড়কে অবৈধ দোকান থাকাসহ উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। আগুন নেভানোর পানি অন্য জায়গা থেকে আনতে হয়েছে।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ফায়ার সার্ভিস বলছে, মার্কেটের ভেতরে পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আগেই দোকান মালিক সমিতি-ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেলিম রেজা বলেন, ‘এখানে সমিতি আছে। তাদের আমরা এই কাজগুলো (অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা) করার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছি, অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজগুলো তারা না করায় এখন আমরা এমন ভয়াবহ অবস্থা দেখতে পাচ্ছি।’ মালিক সমিতি ও ব্যবস্থাপনা কমিটি দায় তদন্তের মাধ্যমে জানা বলে মন্তব্য করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

মার্কেটটি কেন ডিএনসিসির অগ্নি-ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট-ভবনের তালিকায় ছিল না, এমন প্রশ্নে সেলিম রেজা বলেন, ‘কমিটি যখন কাজ করেছে, তখন মার্কেটটি তালিকায় ঢোকেনি। আমাদের যেসব ভবন ও মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলোর ব্যাপারে ১৫ দিন বা এক মাসের মধ্যে যাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়, সে জন্য আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে দিয়েছি। কোনো বাধা, কোনো কিছুর মুখেই আমরা আর থামব না।’

কয়েকজন ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, বুধবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে প্রথমে কৃষি মার্কেটের খ-ব্লকে আগুন লাগে। ব্লকটিতে মুদি পণ্য ও স্টেশনারি পণ্যের দোকান রয়েছে। পরে পশ্চিম পাশের গ-ব্লকেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গ-ব্লকে কাপড় ও গয়নার দোকান রয়েছে। এই ব্লকে আগুন লাগার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা মশার কয়েল থেকে আগুন লাগতে পারে: ফায়ার সার্ভিস : একটি মুদিদোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা মশার কয়েল থেকে এই আগুন লাগতে পারে। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা তদন্ত শেষে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী। সকাল পৌনে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজ রাত ৩টা ৪৩ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস আগুন লাগার খবর পায়। ৩টা ৫২ মিনিটে মোহাম্মদপুর থেকে প্রথমে একটি ইউনিট আগুন নেভাতে অংশ নেয়। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে একে একে ১৭টি ইউনিট এ কাজে যুক্ত হয়। পানি ছিটিয়ে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে মার্কেটের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। ফায়ার সার্ভিস এখন ভেতরের ক্ষতিগ্রস্ত মালামাল সরানোর কাজ করছে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৫০ কর্মী অংশ নিয়েছেন। তাদের সহযোগিতা করেছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং ঢাকা ওয়াসা।

মার্কেটের একটি মুদিদোকান থেকে এই আগুনের সূত্রপাত উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের এই পরিচালক বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে, তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা মশার কয়েল থেকে এই আগুন লাগতে পারে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি, তবে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মী সামান্য আহত হয়েছেন। মার্কেটের সামনে অনেক ভাসমান দোকান ও উৎসুক জনতার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, মার্কেটে প্রায় ১০০টি দোকান ছিল। এসব দোকানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে বলা যাবে। মার্কেটটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের বেশ কয়েকজন দোকানি জানান, এই মার্কেটে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০০ দোকান ছিল।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু : অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকানের প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে ঘটনাস্থলের দক্ষিণ পাশের চৌরাস্তায় হাজির হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর তালিকা করছে দু’পক্ষ। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় মার্কেটের পশ্চিম পাশে উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), আর মার্কেটের দক্ষিণ পাশে তালিকা করছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে শেষ সম্বল খুঁজে ফিরছেন কয়েকজন। অন্যদিকে ব্যবসায়ী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক ব্যক্তি হ্যান্ড মাইকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির ঘোষণা দিচ্ছেন।

জেল প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের তালিকা করছি। তালিকার জন্য তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পর তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।

সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাউকেই মার্কেটের ভেতরে ঢুকতে দেননি। পরে দুপুর ১টার পর মার্কেটটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবি সদস্যরা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়লে তাদের সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

দেখা যায় মার্কেটের পশ্চিম পাশে সোনালী ব্যাংকের নিচে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জড়ো হচ্ছেন এবং তারা অন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসার আহ্বান করছেন।

মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে, আপনারা নিজ নিজ দোকানের সামনে চলে যান। যাতে কেউ কোনো মালামাল সরিয়ে না ফেলতে পারে। পাশাপাশি দোকানটি যে আপনার এর প্রমাণস্বরূপ জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, দোকান মালিকের সঙ্গে চুক্তিপত্র এবং মোবাইল নম্বর নিয়ে আসবেন। ঘোষণায় আরও বলা হয়, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আজকের মধ্যেই মার্কেটের দক্ষিণ পাশে সোনালী ব্যাংকের নিচে আসতে হবে।

অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দোকানের সংখ্যা ৩১৭টি। কিন্তু দোকান ব্যবসায়ীদের দাবি দোকান রয়েছে ৫০০টির বেশি। সিটি করপোরেশন বলছে দোকান পুড়েছে ২১৭টি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024

Theme Download From ThemesBazar.Com
Translate »