জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে একটু সহযোগিতার জন্য সবার দিকে তাকিয়ে আছেন কক্সবাজার শহরের পশ্চিম নতুন বাহারছড়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা। গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠের পর মানুষ করে পৃথিবী জয়ের অদম্য ইচ্ছায় বাড়ি ফেরার দৃঢ় প্রত্যয়ে হাসপাতালে আসা প্রসূতি তানিয়া প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। ইতোমধ্যে হারিয়েছেন সদ্যজাত সন্তানকেও।
গত ১৫দিন ধরে কক্সবাজার সদর হসপিটালের আইসিইউ’র লাইফ সাপোর্টে তানিয়ার জীবন প্রদীপ যেন নিভু নিভু। প্রসূতি তানিয়ার ফুসফুসে বায়ুপ্রবাহের নানা জায়গায় তরল ও পুঁজ জমে মুখে ক্ষত দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ হার্ট বিট স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আইসিইউ’র লাইফ সাপোর্টে রাখা না হলে যে কোনো সময় নিভে যেতে পারে তানিয়ার সম্ভাবনায় সুন্দর জীবনপ্রদীপ। ধূসর হয়ে যেতে পারে তার স্বপ্ন, সাধ এবং ভালোবাসা; মুছে যেতে পারে চিরচেনা প্রিয়মুখ তানিয়া।
কক্সবাজার শহরের পশ্চিম নতুন বাহারছড়ার ক্ষুদ্র মাছ বিক্রেতা আনোয়ারের স্ত্রী তানিয়ার সত্তোর্ধ পিতা-মাতাও দরিদ্র। স্বামী আনোয়ার বিভিন্ন স্টেশনে মাছ ফেরি করে টেনেটুনে সংসার চালান। উত্তম গৃহিনী হয়ে স্বামীকে সমর্থন যুগিয়ে আগামীর পথে এগিয়ে যাচ্ছিল তানিয়া। হঠাৎ সবকিছু যেন ওলোট-পালোট করে দেয় বাচ্চা প্রসবে ‘সিজার’ নামক ব্যাধি। থমকে যান তিনি; ফিকে হতে শুরু করে সম্ভাবনাময় পথচলার। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে তানিয়াকে কক্সবাজার শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেখানকার দায়ীত্বে থাকা ডাক্তার জানান তার গর্ভে থাকা বাচ্চাটি দু'দিন আগেই মারা গেছে। এবং শিশুটির শরীরে পচন ধরেছে জানিয়ে রেফার্ড করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। এসময় চিকিৎসক অপারেশনের পরামর্শ দেন। কিন্তু ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে সিজার করাও বিপদজনক হয়ে উঠে। তাকে বাঁচাতে হলে সিজার আবশ্যক হয়ে উঠে। পরিবারের পরামর্শে সদর হাসপাতালে তানিয়ার অপারেশনের পর থেকে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্ট বিট বন্ধ হয়ে যায়। তখন হতে সদর হসপিটালের আইসিইউ’র লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় ওনাকে।
তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন জানান, ধার-দেনা করে এই পর্যন্ত দুই লাখ টাকা খরচ করেছেন তিনি। প্রতিদিন তানিয়ার চিকিৎসার জন্য ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার প্রয়োজন যা তার মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা কষ্টসাধ্য। এখন স্ত্রীর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সমাজের মানবিক মানুষদের সহযোগিতা পেলেই হয়তো গৃহিনীর চিকিৎসা চালিয়ে নেয়া সম্ভব। এটি সম্ভব হলে তানিয়ার নিভু জীবনে আলো আসতে পারে।
ক্রমাগত ছোট হয়ে আসছে তানিয়ার পৃথিবী। প্রথম বাচ্চা পেটে মারা গেলো, এখন মৃত্যু শয্যায় স্ত্রী- সব মিলিয়ে বিবর্ণ হয়ে উঠছে আনোয়ার হোসেনের চারপাশ। ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না...।’ এ ভরসার বাণী সামনে নিয়ে অন্ধকারে নিভতে যাওয়া তানিয়ার জীবন প্রদীপকে আলোকিত করে তুলতে সবার সাহায্য একান্ত প্রয়োজন। আপনার অল্প সহযোগিতায় হয়তো পূর্ণ হতে পারে তানিয়ার চিকিৎসা সেবা।
আসুন, তানিয়ার পাশে দাঁড়াই, এগিয়ে দেই সহযোগিতার হাত। বেঁচে উঠুক তিনি, স্বপ্নীল আকাশে অহর্নিশ ডানা মেলে উড়ুক তার রঙিন দিনগুলি।
আইসিইউ’র লাইফ সাপোর্টে থাকা তানিয়ার চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা পাঠাতে পারেন বিকাশ করা ০১৬২৪৭৭২৮৩৫-এ নম্বরে। আরও বিস্তারিত জানতে তার স্বামী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে +৮৮০১৮৭৩৮২৮৯৯৪ এ নম্বরে কথা বলতে পারেন।