পরিবার কিংবা সমাজে পুরুষ যে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে এ দিবস তারই স্বীকৃতিস্বরূপ। বাংলাদেশে পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন’ প্রতি বছর দিবসটি উদযাপন করে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের হলরুমে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি উদযাপনের দাবিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম ও অর্থ সম্পাদক আলামিন হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন পুরুষ দিবস উদযাপন উপ-কমিটির প্রচার সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, সদস্য মো. কাজল প্রমুখ।
সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক খান সংগঠনের পক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৯ নভেম্বর আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উদযাপনের দাবি জানান। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি করেন।
দাবিগুলো হলো-
১. অপহরণ: প্রেমঘটিত কারণে ছেলেমেয়ে উভয়ে পালিয়ে গেলে শুধু ছেলে ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হয়। এই কৃতকর্মের জন্য শুধু ছেলের শাস্তি বিধান হওয়াটা অযৌক্তিক বিধায় তা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
২. পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ এ সংযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে শিশু ও নারীর পাশাপাশি পুরুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ককে ‘ধর্ষণ’ বলা যাবে না এবং এক্ষেত্রে যদি শাস্তি হয় তাহলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য শাস্তির বিধান থাকতে হবে।
৪. নারী ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণ আলাদা সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করে পুরুষ ধর্ষণের সংজ্ঞা তৈরি করে লিঙ্গনিরপেক্ষ ধর্ষণ আইন তৈরি করতে হবে।
৫. পারিবারিক জীবন ব্যবস্থা, সভ্য সমাজ ব্যবস্থা, ব্যক্তিগত আইন এবং পুরুষদের মানবাধিকারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশীয় আইনে পশ্চিমা সংস্কৃতিতে সৃষ্ট তথাকথিত বৈবাহিক ধর্ষণের ধারণার অনুপ্রবেশ না ঘটানো।
৬. মিথ্যা ধর্ষণ মামলা প্রমাণিত হলে মামলাকারীর বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির বিধান থাকতে হবে। (ধর্ষকের সমমান শাস্তির বিধান করতে হবে)।
৭. যৌতুক সংক্রান্ত মামলায় সমন বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুর আগে তদন্ত প্রতিবেদন বাধ্যতামূলক করা।
৮. পুরুষের লিঙ্গ কর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে পুরুষকে পুরুষত্বহীন করার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করতে হবে।
৯. বহুবিবাহ প্রতারণারোধে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ডিজিটালাইজ করা।
১০. পুরুষের মানবাধিকার রক্ষা ও পুরুষ নির্যাতন রোধে আইন প্রণয়ন করতে হবে।
১১. কাবিন বাণিজ্যরোধে সাধ্যের অতিরিক্ত কাবিন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, বিধান থাকতে হবে।
১২. ব্যভিচারের ৪৯৭ ধারা সংশোধন করে পরকীয়ায় আসক্ত নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমান শাস্তির বিধান থাকতে হবে।
১৩. পুরুষবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।
আগামীকাল রোববার (১৯ অক্টোবর) দেশের বিভিন্ন স্থানে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে র্যালি ও পথসভার মাধ্যমে সর্বস্তরে পুরুষ দিবস উদযাপন করা হবে।