চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানাধীন পারকি সমুদ্রে নেমে উল্লাসে মেতে উঠেছে নানা বয়সী ভ্রমণপ্রিয়াসি। সৈকতের ঝাউগাছের নিচে বসে প্রিয়জনদের সঙ্গে মধুরসময় কাটাচ্ছেন ভ্রমণপ্রিয়াসি প্রকৃতি প্রেমিরা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে এমনই চিত্র দেখা গেল চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পারকি সমুদ্রসৈকতের মাঝের চর থেকে বাতিঘর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায়।
চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা এলাকার সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি আনোয়ারা উপজেলার ঝাউবনে ঘেরা পারকি সৈকতও গত কয়েক দশকে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় অনেকে পারকি ভ্রমণে যেতে চাইতেন না।
বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর থেকেই পারকি সৈকতে দর্শনার্থী বাড়ছে। এক সময় চট্টগ্রাম নগর থেকে দীর্ঘ পথ ঘুরে আনোয়ারা হয়ে পারকি সৈকতে আসতে সময় লাগত দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এখন কর্ণফুলী নদীর নিচে বঙ্গবন্ধু টানেলের নিচ দিয়ে শহরের পতেঙ্গা থেকে আধা ঘণ্টারও কমসময়ে পারকি সৈকতে আসা যাচ্ছে।
তাই ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে টানেল পার হয়ে পারকিতে আসছেন ভ্রমণপ্রিয়াসি মানুষ। সাগর দেখার পাশাপাশি দুপুরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঝাউবনে বসে রান্না করে খাবার এনেও খাচ্ছেন এসব ভ্রমণপ্রিয়াসি মানুষ।
স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে অনেকের, তাই ছুটির দিনে সন্তান ও পরিবার পরিজনদের নিয়ে পারকি সৈকতে বেড়াতে আসছেন ভ্রমণপ্রিয়াসি মানুষেরা।
কর্ণফুলী টানেলের কারণে নগর থেকে পারকি সমুদ্র সৈকতে অনেক কম সময়ে আসা যাচ্ছে এখন।
সমুদ্রসৈকতে আসা পর্যটকদের কাছে ঝিনুকের মালা বিক্রি করেন স্থানীয় অনেকে। তাঁর মধ্যে একজন লোকমান, তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর থেকেই পারকি সমুদ্র সৈকতে দর্শনার্থী বাড়ছে।
বিশেষ করে স্কুলশিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার কারণে দূরদূরান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীরা ও অনেক দর্শনার্থীও আসতে শুরু করেছে।
এখন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ঝাউবনে ঘেরা পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠছে। টানেল হওয়ায় এই সমুদ্র সৈকতে পর্যটক অনেক বেড়েছে।
গতকাল বিকেলে ঝাউবনে ঘেরা আনোয়ারারা পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিনত হয়েছে। টানেল হওয়ায় এই সৈকতে এখন পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন বঙ্গবন্ধু টানেল হওয়ার পরে এই এলাকায় ভ্রমণপ্রিয়াসিদের আসা যাওয়া অনেক বেড়েছে এবং এতে আমরা খুব খুশি এবং এলাকার সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার ধারও খুলেছে, আমরা চাই এই এলাকাটি সরকারের নজরে থাকুক।
এবং ভ্রমণপ্রিয়াসিদের নিরাপত্তার যেন কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে প্রশাসন যেন খিয়াল রাখেন, যাতেকরে মানুষ এখানে নির্বিঘ্নে ২৪ ঘন্টা আসাযাওয়া করতে পারেন। আর এতে এই এলাকার স্থানীয় সাধারণ মানুষের নতুন নতুন কর্মস্থল সৃষ্টি হবে।
বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর থেকেই পারকি সৈকতে দর্শনার্থী বাড়ছে। এক সময় চট্টগ্রাম নগর থেকে দীর্ঘ পথ ঘুরে আনোয়ারা হয়ে পারকি সৈকতে আসতে সময় লাগত দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এখন কর্ণফুলী নদীর নিচে বঙ্গবন্ধু টানেলের নিচ দিয়ে শহরের পতেঙ্গা থেকে আধা ঘণ্টারও কম সময়ে পারকি সৈকতে আসতে পারছে মানুষ।
গত ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল উদ্বোধন করা হয়। টানেলের টোল প্লাজা থেকে পারকি সমুদ্রসৈকতের দূরত্ব মাত্র তিন কিলোমিটার। এতে নগরীর সঙ্গে পারকি সৈকতে যোগাযোগ সহজ হয়েছে।
এদিকে টানেলের কারণে দর্শনার্থী বাড়লেও হরতাল-অবরোধের কারণে কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। তবে ছুটির দিনে সৈকতে সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড় লেগে থাকে।
পারকি সমুদ্রসৈকতে দর্শনার্থী বাড়াতে পর্যটন করপোরেশনের ৭৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলছে।
প্রকল্পের অধীনে গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটকদের থাকার জন্য ১০টি সিঙ্গেল কটেজ, চারটি ডুপ্লেক্স কটেজ, তিনতলা মাল্টিপারপাস ভবনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো। এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।