চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলাস্হ বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রকাশ্যে নুর মোস্তফা ওরফে বজল মিয়া (৫৫) নামে এক গ্রাম্য সর্দারকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত ব্যক্তি উপজেলা যুবদলের নেতা মোঃ ইসমাইলের বড় ভাই।
মোঃ ইসমাইল জানায়, গতকাল রোববার (২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং) সন্ধ্যা সাত ঘটিকায় উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের পশ্চিম লালানগর গ্রামের নোয়াপুকুর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বজল এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মুজিবুল হকের পুত্র।
এদিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত যুবক তৌহিদুল ইসলাম নিহত বজল এর আপন মামাতো ভাই। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের তথ্যসূত্রে সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ জানান, পারিবারিক পূর্ব বিরোধের জেরে সন্ধ্যায় নুর মোস্তফাকে একা পেয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালান তৌহিদুল ইসলাম ও তাঁর অনুসারী ১৫-২০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল।
এই সময় তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মোস্তফার ডান হাতের কব্জি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিতে তাঁর বুকে গুলি করে।
ঘটনার পর চারদিক থেকে মানুষ জড়ো হতে থাকলে হামলাকারী তৌহিদুল ও তাঁর অনুসারীরা ফাঁকা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়।
পুলিশ আরো জানায়, নিহত নুর মোস্তফা ও তৌহিদুল ইসলাম আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই। তাদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এছাড়াও ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের জন্য তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রাম্য সালিশ হয়। সালিশে তাকে গ্রামে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছিল।
যার কারণে নুর মোস্তফার উপর ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তৌহিদুল। রবিবার সন্ধ্যায় তাকে একা পেয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, হামলা পরবর্তীতে আহত ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়।
কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। শরীর থেকে তাঁর ডান হাত বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি বুকে গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পূর্ব বিরোধের জেরে গ্রাম্য সর্দারকে কুপিয়ে হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন পিপিএম।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। হত্যাকারী তৌহিদুল একজন স্বীকৃত ডাকাত। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।
নিহত ওই ব্যক্তির শরীর থেকে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হলেও গুলির ব্যাপারে নিশ্চিত নন তিনি।
হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।