দেশি নিউজ অনলাইনঃ
বাংলাদেশের সাতই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা মনে করছে, এই নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
ইউরোপীয় কমিশনের ওয়েবসাইটে ৩৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় ভোটাররা পুরোপুরিভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ পান নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থী ও তাদের দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে ভোটারদের সত্যিকার অর্থে পছন্দের প্রার্থী বেছে নেয়ার সুযোগ ছিলও না।
এছাড়া ভোটের দিন বিভিন্ন জায়গায় ব্যালট বাক্স ভর্তি ও জালিয়াতির চেষ্টা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই প্রতিবেদনকে খুব একটা আমলে নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। তারা বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মোঃ. আনিছুর রহমান বলেন, “কে কী বললো আর না বললো তাতে নির্বাচন কমিশনের কিছু আসে যায় না। ইইউ তাদের কথা বলেছে। তারা তাদের কথা নিয়ে থাকুক। অসুবিধা নাই। আমরা আমাদের কথা বলেছি আগেও। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি”।
গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ বিষয়ে জানতে প্রাক-নির্বাচনী মিশন পাঠায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা বাংলাদেশে ২০ দিন অবস্থান করে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, সাংবাদিক, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন পক্ষের সাথে শতাধিক বৈঠক করে।
ঐ বৈঠকের কয়েকদিন পর তারা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানায় বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে সার্বিকভাবে নির্বাচন মূল্যায়ন করতে তাদের একটি কারিগরি দল পাঠায় বাংলাদেশে।
গত সাতই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ঐ কারিগরি দল বাংলাদেশে আসে। দুই মাস অবস্থান করে শুক্রবার রাতে ইউরোপীয় কমিশনের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিষয়টিকে বিরোধী জোট বিএনপির ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, “বিএনপি মিথ্যা তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বিভ্রান্ত করছে।''
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐ প্রতিবেদনে নির্বাচনের পাঁচটি বিষয়ে বিশেষ নজর দিয়েছে। সেই সাথে তুলে ধরেছে ২১ দফা সুপারিশ।