মেহেদী হাসান অপূর্ব,সিলেটঃ
সিলেটে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের তিন কিশোরীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের কারণে ঐ তিন কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নগরীর শিবগঞ্জ লামাপাড়ায় অবস্থিত পুনর্বাসন কেন্দ্রটি সমাজসেবা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত।
জানা গেছে, পুনর্বাসন কেন্দ্রের তিন কিশোরী তানিয়া আক্তার শাহিনা (১৪), সাইমা আক্তার পিংকি (১৩) ও মুক্তামণি (১৫) নির্যাতন থেকে বাঁচতে ঐ ভবনের চার তলা ভবনের ভ্যান্টিলেটর ভেঙে কার্নিশে উঠে তিন কিশোরী লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন ভবনের নিচে অবস্থান নেন। এসময় তাদের আত্মহত্যা না করার জন্য বুঝানো ফাঁকে আরও কিছু লোক ভবনের জানালার গ্রিল ভেঙে কার্নিশ থেকে তাদের উদ্ধার করেন।
পুলিশ বলছে- এটি কোন আত্মহত্যার কোন ঘটনা নয়। ঐ তিন কিশোরী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো।
তিন কিশোরীর নির্যাতনে বর্ণনা
নির্যাতনের শিকার ঐ তিন কিশোরী সাংবাদিকদের জানান, এই কেন্দ্রে তারা পুলিশের মাধ্যমে আসার কারণে কোন টাকা দিতে হয় না। কিন্তু টাকার কারণে পুনর্বাসন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শরিফা বেগম, কণিকা দে এবং রাবেয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, অশ্লীল কথাবার্তা বলেন। জামাকা-পড়তো দূরে থাক, ঠিকমতো খাবার, গোসল, কাপড় কাঁচার সাবান, ব্যবহারের জন্য তেলও দেন না। যে কারণে পালাতে নয়, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল তারা।
কিশোরীদের অভিযোগ, তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কথা বলতে দেওয়া হয় না। খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না পেয়ে বড় স্যারের কাছে অভিযোগ দিলে তারা শারীরিক নির্যাতন করে। মা-বাবা তুলে গালিগালাজ করে।
যা বলছে পুনর্বাসন কেন্দ্র ও পুলিশ
এ ব্যাপারে -এর কর্তৃ পক্ষ থেকে পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক বাসুদেব দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি খুবই ব্যস্ত রয়েছেন জানিয়ে বলেন, আমি কথা বলতে পারবো না। ব্যস্ত আছি। তবে ঐ তিন কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ভালো আছে।
ঘটনার সত্যতা ও কিশোরীদের আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-উর-রশিদ বলেন, ঐ তিন কিশোরী পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো। পরে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পুনর্বাসন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা ৯৯৯ ফোন দিয়ে জানান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আত্মহত্যার চেষ্টার বিষয়টি সঠিক নয়। এছাড়া এই কেন্দ্র থেকে আমরা কোন নির্যাতনের অভিযোগ পাইনি।