সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতকে ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের লাকেশ্বর পলিরগাঁও (এল.পি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমানের পদত্যাগ/অপসারণ দাবির ঘটনায় ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে এক বৈঠক অনুষ্টিত হয়। এতে উভয় পক্ষ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আগামী বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি কতৃক প্রতিবেদন দাখিল করার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। বৈঠক ও তদন্ত কমিটি গঠনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মোস্তফা মুন্না।
উল্লেখ্য. গত ২৫ আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখে দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সাধারন শিক্ষার্থীরা। এর পর বিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
অপরদিকে প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমানের পদত্যাগ/অপসারণের দাবিতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল রোববার অভিভাবক ও সর্বস্থরের জনসাধারণের পক্ষে নেছার আহমদ, রাজু আহমদ, মুশাদ আহমদ স্বাক্ষরিত এবং সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফারহান আহমদ, রায়হান আহমদ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের লাকেশ্বর পলিরগাঁও (এল.পি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমান গত ১ জানুয়ারী ১৯৯৫ ইং তারিখ হতে অদ্যবদি অত্র বিদ্যালয়কে দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। বিগত কয়েকদিন যাবত তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ফলে তিনি স্কুল থেকে পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমান বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, তিনি মাসে থেকে ১০ দিন বিদ্যালয়ে আসেন, কিন্তু পুরো মাসের বেতন উপভোগ করেন। বিগত ২০২০ইং সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান, নৈশ্য প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়াসহ মোট ৫টি পদে নিয়োাগ প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ রেখে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেন এমনকি ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও উক্ত নিয়োগ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, বিগত ১৬ বছরে স্কুল ফান্ডের প্রায় ৫০ লাখ টাক আত্মসাত, অতিরিক্ত সেশন ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি এবং এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জামানত 'বাবদ ১৫,০০০ টাকা নেওয়া হয়। শর্তস্বাপেক্ষে ফেরতযোগ্য হলেও আজ পর্যন্ত কেউ ফেরত পাননি। প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমান রাতের আঁধারে নিজের মতাদর্শের লোক নিয়ে কমিটি গঠন, এস.এস. সি পরীক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলে স্বজনপ্রীতি এবং টাকা পয়সা ঘুষ নিয়ে ফলাফল পরিবর্তন করা হয়। তার অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ । অনেক সময় আমরা প্রতিকার চেয়ে কোনো সুরাহা পাননি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। কারণ প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমানের দলীয় বাহিনী দিয়ে তিনি প্রাণ নাশের হুমকি-ধামকি দিতেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী পৃথক দুটি অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যত্ ানিশ্চিত করেছেন।