চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানাধীন ৬নং বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন এর (২নং ওয়ার্ড) উত্তর বাঁশবাড়ীয়া এলাকায় যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে উক্ত মামলাটি দায়ের করেন। মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়,
বাদী: মোঃ আব্দুল সাত্তার (৫৪), পিতা: নুর মোহাম্মদ। বিবাদী: ১/ মোঃ মুজিব (২৪),পিতা: মো.মানিক। ২/ মো:মানিক (৫০), পিতা: মৃত-মাহমুদুল। সীতাকুণ্ড মডেল থানায় দায়ের করা উক্ত মামলার ধারা – ১১ (গ) ৩০২০০০ /২০০৩ নারী-শিশু ও যৌতুক বিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, বিগত (২৭ নভেম্বর ২০২৩) ইংরেজি তারিখে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক আমার বিবাহ হয়। বিবাহের পর হইতে আমার শ্বশুর মোঃ মানিক এর কুপরামর্শে সব সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে আমাকে অত্যাচার করতো! বিবাহের পর থেকে আমার স্বামী যৌতুকের জন্য মারধর করতো। আমার ভবিষ্যৎ সুখের কথা চিন্তা করে বিবাহের (২ মাস) পর আমার বাবা (১ টি) মোটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য (১ লক্ষ) টাকা প্রদান করে। উক্ত টাকা দেওয়ার পর কিছুদিন ভালো ভাবে সংসার জীবন অতিবাহিত হওয়ার পর আবারও টাকার জন্য আমার স্বামী আমাকে মারধর শুরু করে। এরপরে আমি বাধ্য হয়ে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। যাহার নং-সিআর মামলা নং-৯২৩/২৪ ধারা-যৌতুক নিরোধ আইনে ২০১৮ এর ৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলা দায়ের এর পর থেকেই মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য আমার স্বামী ও শ্বশুর মিলে আমাকে বিভিন্ন রকম ইমোশনাল কথাবার্তা বলে আমার থেকে আর যৌতুক চায়বে না বলে। তখন আমি আমার সংসারের কথা চিন্তা করে উক্ত মামলাটি বিজ্ঞ আদালত থেকে গত ২০/০২/২০২৫ ইং তারিখ এ প্রত্যাহার করি।
কিছুদিন না যেতেই আমার স্বামী পুনরায় আমাকে ০৩/০৩/২০২৫ ইং তারিখ বিকাল অনুমান ০৫.০০ ঘটিকায় আমার স্বামী ঈদ উপলক্ষ্যে যৌতুক হিসাবে (১ লক্ষ) টাকা দেওয়ার জন্য বলে। আমি আমার বাবার নিকট থেকে টাকা এনে দিতে পারবোনা বললে, আমার স্বামী ও শ্বশুর মিলে আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। এবং তাঁরা আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদান করে।
আমি তাদের হুমকিধামকির প্রতিবাদ করলে আমার স্বামী ও শ্বশুর মিলে আমাকে এলোপাতাড়ী মারধর শুরু করে! এতে আমার ডান চোখে ঘুষি মেরে চোখকে রক্তাক্ত জখম করে! পুনরায় আমাকে বাম চোখে ঘুষি মারে! আমি চিৎকার করলে আমার স্বামী ও শ্বশুর আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। পরে আমি ঘটনার বিষয়ে মোবাইল ফোনে আমার বাবাকে জানায়। তারপর আমার বাবা সীতাকুণ্ড মডেল থানায় গিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা জানান, আমার মেয়ের জামাই বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে যৌতুক এর টাকা চেয়ে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে। এর আগে তাকে আমি মোটরসাইকেল কেনার জন্য একলক্ষ টাকা প্রদান করি, যাতে আমার মেয়ের সংসারে কোনো অশান্তি না হয়।
কিছুদিন না যেতেই আবার ঈদ উপলক্ষে একলাখ টাকার দাবি করে। আমার মেয়ে দিবেনা বলাই আমার মেয়েকে আমার মেয়ের জামাই মোঃ মুজিব ও আমার মেয়ের শশুর মোঃ মানিক মিলে কিলঘুসি মারে। যখন আমি বিষয়টা শুনতে পাই সাথেসাথে সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশের মাধ্যমে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। পরে আমি বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় উক্ত মামলা দায়ের করি।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুজিবর রহমান জানান, ঘটনাটি আমি জেনেছি ভুক্তভোগী নারীর পরিবার মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ উক্ত মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালি যাচ্ছে।
WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024
Leave a Reply