বিশ্বনাথের বাসিয়া নদীর দুই পাড়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রশাসক আলাউদ্দিন কাদের
স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বনাথ পৌরসভার কর্তৃপক্ষ জানান অত্যন্ত দুঃখজনক যে, বহু বছর ধরে সংকটে নিমজ্জিত বিশ্বনাথ উপজেলার প্রাণকেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত বাসিয়া নদী দখল, দূষণ ও অবহেলার কারণে প্রায় মৃত অবস্থায় পৌঁছে গেছে। বাসিয়া নদীতে প্রতিনিয়ত প্লাস্টিক, গৃহস্থলী বর্জ্য, পাশ্ববর্তী স্থাপনাসমূহ ও বাজার হতে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্বনাথ পৌরসভা, সিলেট কর্তৃক প্রাথমিকভাবে বাসিয়া নদীর দুইপাড় (উপজেলা কোর্ট পয়েন্ট হতে টিএন্ডটি মোড় পর্যন্ত) পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ চাওয়া হলে তাদের সুপারভাইজার টিম দুইবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তারা শুধু লেবার কর্তৃক পরিষ্কার বাবদ =১২,৭৮,৪৫০/=(বার লক্ষ আটাত্তর হাজার চারশত পঞ্চাশ)টাকা এবং এক্সাভেটর ও লেবারের সমন্বয়ে পরিচ্ছন্নতা বাবদ =১৭,১৮,৪৫০/=(সতের লক্ষ আঠার হাজার চারশত পঞ্চাশ) টাকার একটি খসড়া প্রাক্কলন প্রস্তাব করেন। পরিকল্পনা মতে তারা নদীর প্রায় ৬০০ মি: অংশের দুই পাড় ও দুটি ব্রীজের নীচ হতে প্রায় ২৫০ টন ময়লা অপসারণযোগ্য বলে উক্ত দুইটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে কারিগরি সীমাবদ্ধতা ও পৌরসভার আর্থিক সঙ্গতির কথা বিবেচনা করে পুনরায় পরিকল্পনা পেশ করার জন্য অনুরোধ করা হলে প্রায় =৬.৪০,০০০/=(ছয় লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকার মধ্যে এক্সাভেটর ও লেবারের সমন্বয়ে টিএন্ডটি রোড হইতে বাসিয়া ব্রীজ পর্যন্ত কাজ করার পরিকল্পনা পাওয়া যায়। উল্লেখিত প্রস্তাবের আলোকে প্রথম ধাপে ২২/০৩/২০২৫ইংরেজী হতে ২৮/০৩/২০২৫ইংরেজী তারিখ পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা এক্সাভেটর ও লেবার দিয়ে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করা হয়। এ সময় ০৭ দিনে এক্সাভেটর ও লেবারের সমন্বয়ে ট্রাকের মাধ্যমে প্রায় ৫০ টন ময়লা অপসারণ করা হয়। প্রথম ০৩ দিন সিটি কর্পোরেশন তাদের ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে দ্রুত কাজের স্বার্থে ও ব্যয় সংকোচনের জন্য শেষ ০৩ দিন পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা ফেলা হয়। ১ম পর্যায়ের এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে নদীর প্রায় ৪০০ মি: অংশে ব্যয় হয়েছে প্রায় =৪,৯২,০০০/=(চার লক্ষ বিরান্নব্বই হাজার)টাকা।
অবৈধ দখলদারদের কর্তৃক দায়েরকৃত দুইটি রিট পিটিশনে উচ্ছেদ নথির উপর মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আরও বৃহৎ পরিসরে কার্যক্রম গ্রহণ সম্ভব হয় নি। ভবিষ্যতে বিশ্বনাথবাসীর স্বার্থে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম এবং একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নদী খনন বৃহৎ পরিসরে করার জন্য সরকারের কাছে পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বরাদ্দ প্রদানের জন্য আবেদন করা হবে। কিন্তু এরই মধ্যে আমরা লক্ষ্য করছি যে, বাসিয়া নদীর দুই তীর ও ব্রীজের নিচে পরিষ্কারকৃত স্থানে পুনরায় ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।
প্রাথমিকভাবে গৃহীত এই উদ্যোগ একটি বার্তা দেয়, পরিবেশ রক্ষা কেবল সরকার বা কোন সংস্থার একক দায়িত্ব নয়, বরং এটি আমাদের সকলের দায়িত্ব। তাই বাসিয়া নদী সংরক্ষণ, বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ এবং স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কাম্য।
WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024
Leave a Reply