পূর্ব বিরুধের জের ধরে হামলার ঘটনায় সিলেটের বিশ্বনাথ থানায় দায়ের করার মামলার আসামী পক্ষের সাজানো পাল্টা মামলায় বিপাকে পড়েছে একটি অসহায় বাদী পরিবার। সম্প্রতি পূর্ব বিরুধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় বৃদ্ধা নারী ও যুবতী’সহ একটি অসহায় পরিবারের ৪ জন সদস্য গুরুত্বর আহত হন।
ওই হামলার ঘটনায় উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সিংরাওলী গ্রামের খুর্শেদ আলীর পুত্র রুবেল মিয়া বাদী হয়ে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে সম্প্রতি থানায় একটি মামলা (বিশ্বনাথ থানার মামলা নং ২১) দায়ের করেন। মামলার অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সিংরাওলী গ্রামের মজম্মিল আলী পুত্র জামাল উদ্দিন, মৃত মর্তুজ আলীর পুত্র শাকির হোসেন, জামাল উদ্দিনের পুত্র মিজান মিয়া, মর্তুজ আলীর স্ত্রী রাবেয়া বেগম, জামাল উদ্দিনের স্ত্রী জাহানারা বেগম, আব্দুল করিমের পুত্র মঈন উদ্দিন।
এদিকে রুবেল মিয়ার মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত পক্ষ ও এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ মামলা তুলে দিতে বাদীকে (রুবেল) চাপ দিতে শুরু করেন। বাদী রুবেল মিয়া প্রভাবশালীদের কথায় রাজি না হওয়ায় তাদেরকে (বাদী পক্ষকে) ঘায়েল করার জন্য ঘটনার ৩ দিন পর ঘটনাস্থলে না থাকা ব্যক্তিকে বাদী সাজিয়ে বিশ্বনাথ থানায় পাল্টা মামলা (বিশ্বনাথ থানার মামলা নং ২৫) দায়ের করিয়েছে অভিযুক্ত পক্ষ। ওই সাজানো পাল্টা মামলা নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
মামলা পর থানায় দায়ের করার মামলার লিখিত অভিযোগপত্রে বাদী রুবেল মিয়া উল্লেখ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিবাদীগনের সাথে বাদী পক্ষের লোকজনের দীর্ঘদিন যাবৎ জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে সম্প্রতি অভিযুক্ত পক্ষ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাদী পক্ষকে গালিগালাজ শুরু করে। এর একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে বাদী পক্ষের উপর হামলা চালায় অভিযুক্ত পক্ষ। এতে বাদী, বৃদ্ধা নারী ও যুবতী’সহ ৪ জন গুরুত্বর আহত হন। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রæত সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী রুবেল মিয়ার অভিযোগ, তাদের (বাদী) উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তরা এলাকার প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে থানায় দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় হুমকি দিয়ে বলে, মামলা তুলে না নিলে, তোমাদের উপর হামলা-মামলা করে মামলা করার স্বাদ মিটিয়ে দিব। এরপর ঘটনার ৩ দিন পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকা একজনকে বাদী সাজিয়ে আমাদের (বাদী) পরিবারের ৭ জনকে অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মিথ্যা-সাজানো একটি পাল্টা মামলা দায়ের করেছে অভিযুক্ত পক্ষ। তিনি আরো বলেন, পাল্টা মামলার বাদী রাহেলা বেগম ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলেন না। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে বা রাহেলা বেগমের ওই দিনের মোবাইলের কললিষ্ট চেক করলেই আসল ঘটনা উদঘাটন হবে। পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ওই মিথ্যা ও সাজানো মামলাটি দায়ের করেছে আমার (রুবেল) দায়ের করার মামলার অভিযুক্তরা।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে রুবেল মিয়ার অভিযোগের সত্যাতার ব্যাপারে জানতে চাইলে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন পাল্টা মামলার বাদী রাহেলা বেগম।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার কামাল মিয়া বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার কয়েক জন মুরব্বীকে সাথে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে চাই। আমরা বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় সমাধান করার চেষ্টা করি, কিন্তু একটি পক্ষ আপোষ-মিমাংশার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এরপর বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে শুনেছি।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, এঘটনায় উভয় পক্ষে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে অযথা কাউকে হয়রাণী করা হবে না।