মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
বিশ্বনাথের বাসিয়া নদীর বর্জ্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রেসবিজ্ঞপ্তি। বিশ্বব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটে দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উদ্যোগে সীতাকুণ্ডে বিক্ষোভ মিছিল ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ডে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিকদলের বিক্ষোভ মিছিল চন্দনাইশে শ্রীশ্রী লোকনাথ-রামঠাকুর সেবাশ্রমে বাসন্তী পূজা অনুষ্ঠিত বিশ্বনাথে সাংবাদিকদের নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে তিন সাংবাদিক সংগঠন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাংসের দামের তুলনায় বাংলাদেশে এখনো মানুষের দাম বেশি! জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কক্সবাজারে সংঘর্ষে জামায়াতের ওয়ার্ড আমিরসহ নিহত ৩ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সীতাকুণ্ড শাখার ঈদ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠিত মালয়েশিয়ার (INTI) ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্কলারশিপ পেয়েছেন মোঃ জিয়া উদ্দিন নয়ন। লাউডোব ইউনিয়নে কালিকাবাটী গ্রামের ঘটনা কে কেন্দ্র করে সাবেক সেনা সদস্যের সাংবাদিক সন্মেলন
বিজ্ঞপ্তিঃ

সারাদেশে  প্রত্যেক  বিভাগ,জেলা ও উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগঃ ই-মেইল-Newsdeshy@gmail.com/Mmdidar7@gmail.com মোবাইলঃ 01714430261/01720834962 WhatsApp & Imo:01878518066/00966509665820 #বিশ্বব্যাপী আপনার প্রতিষ্টান ও পন্যের প্রচার প্রসারে বিজ্ঞাপন দিন

সীতাকুণ্ডে ১৯৯১ সালে স্বজনহারাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে ৩৩ বছর পর ২৯ এপ্রিল

  • আপডেট সময়ঃ সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৮৭ ভিউ

কাইয়ুম চৌধুরী, সীতাকুণ্ডঃ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে ১৯৯১ সালের ২৯ শে এপ্রিল, বয়ে যাওয়া সেই জলোচ্ছাসের ভয়ংকর রাতে সীতাকুণ্ডে যা ঘটেছিল মনে পড়লে গা কেমন যেন শিউরে উঠে,উপকূলবাসী ৩৩ বছর পেরিয়ে গেলে ও ভুলতে পারেনি সেই রাতের দুঃসহ স্মৃতি। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল এইরাতে সীতাকুণ্ড সহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপকূল দিয়ে বয়ে গিয়েছিল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ‘ম্যারি এন’ নামক
মানব খেকোটি।

সেদিন মধ্যরাতে আঘাতহানা এ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গিয়েছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল পুরো উপকূল। লাশের পরে লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল চারদিকে। বিস্তীর্ণ অঞ্চল পরিণত হয়েছিল ধ্বংস্তূপে। সেদিন উপকূলে আঘাত হানা ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিমি (১৫৫ মাইল/ঘণ্টা)। এর প্রভাবে সৃষ্ট ২০/৩০ ফুট) উঁচু জলোচ্ছ্বাসে সেদিন সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর,ফৌজদারহাট,ভাটিয়ারী, সোনাইছড়ি,কুমিরা,বাঁশবাড়িয়া,বাড়বকুণ্ড,মুরাদপুর,সৈয়দপুর ইউনিয়নের উপকূলগুলোতে বেশী আঘাত করেছিল।

প্রলয়ঙ্কিয় এই ধ্বংসযজ্ঞের ৩৩ বছর হয়ে গেল, এখনো স্বজন হারাদের আর্তনাৎ থামেনি। ঘরবাড়ি হারা এলাকার মানুষ এখনো অরক্ষিত উপকূলে আকাশে কাল মেঘ দেখলে,ঘূর্নিঝড়ের সংবাদ পেলে,ভারী বর্ষায় নির্ঘুম রাত কাটান ।তাদের দীর্ঘদিনের দাবি, স্থায়ী বেড়িবাঁধের মাধ্যমে উপকূল নিরাপদ করা যায়,৩৩ বছরেও এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ হয়নি।
উপকূলীয় সমুদ্রের হিংস্র ভয়ানক আক্রমনের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারে না অজানা শঙ্কায় সীতাকুন্ডের উপকূলীয় এলাকার প্রায় আড়াই লাখ ভিটা বাড়ী, স্বজনহারারা যখন পরিবারের সদস্যদের কথা মনে পড়ে রাতে ঘুম হয়না,বাঁধের উপর আসলেই বেশী মনে পড়ে স্বজন হারা দের স্মৃতি।তখন সাগরের দিকে তাকিয়ে স্বজনদের খুঁজে।

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল মধ্যরাতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল সলিমপুর থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত ৯টি ইউনিয়ন। প্রায় ২২৫ কিলোমিটার গতিবেগ সম্পন্ন ও ৩০–৩৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে উপকূল পরিণত হয়েছিল বিরাণ ভূমিতে। এসময় মারা যায় এলাকার প্রায় সাত হাজার মানুষ। নিখোঁজ হয়েছিল প্রায় তিন হাজার শিশু ও নারী-পুরুষ। প্রায় তিনশ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছিল। এখনো এলাকার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।
সলিমপুর, সৈয়দপুর, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী,বাশঁবাড়িয়া, বাড়বকুন্ড, মুরাদপুর সহ কয়েকটি উপকূলীয় এলাকা ঘুরে বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিছু কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ নির্মিত হলেও তা বছর যেতেই বাঁধ ভাঙতে শুরু করে।এখনো বিভিন্নস্হানে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা রয়েছে কয়েক কিলোমিটার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল আলম আমাদের সময় কে জানায়, ১৯৯১ সালে ২৯ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক প্রাণহানির পর আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার অর্থায়নে সীতাকুণ্ড এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। সীতাকুন্ডের পৌর এলাকাসহ ৯টি ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কথা থাকলেও হয়েছে মাত্র ৫৬টি। যা পর্যাপ্ত নয়।

উপকূলীয় এলাকা ঘুরে বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বললে তারা আমাদের সময় কে জানায়, ১৯৯১ সালে জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক জান মালের ক্ষতির পর উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে কয়েক’শ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁশবাড়িয়ার বোয়ালিয়াকূল বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন পর সংস্কার হলেও এর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এক বছর না যেতেই বাঁধটি পুনরায় ভাঙ্গে যায়।
বাশুবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর আমাদের সময় কে জানায়, তার এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলিয়ন হয়ে যায়,একবার কিছুটা মেরামত করা হয়েছিল,প্রবল জোয়ারে আবার বিলীন হযে যায়। পূনরায় মেরামত জরুরী।

ভাটিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাজিম উদ্দিন বেঁড়িবাধ প্রসঙ্গে আমাদের সময় কে বলেন, অনিয়ম দুর্নীতি ভরা বেড়িবাঁধ সংস্কার,আজ বাইরে কালই চলে যাচ্ছে সাগরে। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বোয়ালিয়াকূল থেকে আকিলপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার বেডিবাঁধ সংস্কার করলেও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের কারণে এটি আবার ভেঙ্গে গিয়েছে প্রায়।
সলিমপুর থেকে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকা দেখা গেছে, শিপইয়ার্ড নির্মাণ করতে গিয়ে ওইসব এলাকায় বনায়ন ধ্বংস করা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম আমাদের সময় কে জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের অনুপাতে আশ্রয় কেন্দ্র অপ্রতুল।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯১ সালের মতো পুনরায় যদি এমন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়, তাহলে আরো ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হতে পারে।
উপকূলীয় বনবিভাগের অগোচরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বন বিভাগের জায়গা দখল ও বন উজাড় চলতে থাকায় চরম হুমকীর মুখে পড়েছে উপকূলীয় বেঁড়িবাধ।

সীতাকুন্ড উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এম এম কামাল উদ্দীন আমাদের সময় কে জানান, বিভিন্ন কারনে বর্তমানে সীতাকুন্ডের উপকুলীয় এলাকায় বনায়ন বন্ধ রয়েছে। কিছু মহল রাতের আধারে বনায়ন ধ্বংস করছে। তিনি মনে করেন উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর বনায়নের প্রয়োজন রয়েছে। বনায়ন হলেই বেড়িবাঁধ রক্ষা পাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024

Theme Download From ThemesBazar.Com
Translate »